সিপিএলে সাকিবের আরেকটি ‘গোল্ডেন ডাক’

ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (সিপিএল) পরপর দুই দিনে একই তেতো স্বাদ পেলেন সাকিব আল হাসান। গায়ানা অ্যামাজন ওয়ারিয়র্সের হয়ে প্রথম ম্যাচে প্রথম বলে আউট হওয়ার পর দ্বিতীয় ম্যাচেও তিনি বিদায় নিলেন প্রথম বলেই। বল হাতে অবশ্য তার শিকার ২ উইকেট। তার দল দেখা পেল টানা দ্বিতীয় জয়ের।




ফাফ দু প্লেসির ঝড়ো সেঞ্চুরিতে সেন্ট লুসিয়া কিংস বড় স্কোর গড়লেও গায়ানা ম্যাচ জিতে নেয় ৬ উইকেটে। বাংলাদেশ সময় শুক্রবার ভোরে শুরু হওয়ার ম্যাচে সেন্ট লুসিয়া ২০ ওভারে তোলে ৫ উইকেটে ১৯৪ রান। অধিনায়ক দু প্লেসি ৫৯ বলে ১০৩ রানের ইনিংস খেলেন ১০ চার ও ৬ ছক্কায়।

রান তাড়ায় রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও শেই হোপের ঝড়ো ফিফটিতে গায়ানা ম্যাচ জিতে নেয় ৪ বল বাকি থাকতে। ৪ ওভারে ৩৩ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন সাকিব। পরে ব্যাটিংয়ে আগের দিনের মতোই চার নম্বরে নেমে আউট হয়ে যান প্রথম বলে।

আগের দিন ব্যাটিংয়ে ‘গোল্ডেন ডাক’ পাওয়ার পর বোলিংয়ে ১টি উইকেট নিয়েছিলেন বাংলাদেশের টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক। প্রথম ৬ ম্যাচে স্রেফ ১টিতে জিততে পারা গায়ানা অবশ্য সাকিব যোগ দেওয়ার পর জয় পেল দুই ম্যাচেই।




গায়নার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা সেন্ট লুসিয়া প্রথম ওভারেই হারায় ওপেসার মার্ক ডেয়ালকে। তবে নিরোশান ডিকভেলাকে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেটে শতরানের জুটি গড়েন দু প্লেসি।

আগের ম্যাচে নতুন বল হাতে নেওয়া সাকিবকে এ দিন আক্রমণে আনা হয় পঞ্চম ওভারে। সেই ওভারে টানা দুই বলে চার-ছক্কা মারেন দু প্লেসি। সাকিব দ্বিতীয় ওভারটি করেন পাওয়ার প্লে ঠিক শেষ হওয়ার পরই। দু প্লেসি বাউন্ডারি মারেন ওই ওভারেই।

সাকিবের প্রথম ২ ওভারে আসে ১৮ রান। দু প্লেসি ও ডিকভেলার জুটির সময় আর বোলিং পাননি সাকিব। দ্বিতীয় উইকেটে ৭৮ বলে ১৩২ রানের দুর্দান্ত জুটি গড়েন ওই দুজন। তাতে অবশ্য ডিকভেলার রান কেবল ৩২ বলে ৩৬ রান। মূল কাজটা করেন দু প্লেসিই। জুটিতে তার অবদান ৪৬ বলে ৯২!

ইমরান তাহিরকে ছক্কা মেরে তিনি সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন ৫৬ বলে। ৩৮ বছর বয়সী দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যানের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের চতুর্থ শতরান এটি। প্রথম বিদেশী ব্যাটসম্যান হিসেবে সিপিএলে করলেন তিনি একাধিক সেঞ্চুরি।




চতুদর্শ ওভারে ডিকভেলাকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন ইমরান তাহির। পরের ওভারেই সাকিব পান ম্যাচে তার প্রথম উইকেটের দেখা। ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে খেলার চেষ্টা করেন অ্যাডাম হোস। সাকিব একটু টেনে খাটো করে দেন লেংথ। ১ রানে স্টাম্পড হন হোস।

ওই ওভারের প্রথম বলে দু প্লেসি সিঙ্গেল নেওয়ার পর বাকি ৫ বলে আর রান দেননি সাকিব। নিজের শেষ ওভারটি করতে আসেন তিনি ইনিংসের সপ্তদশ ওভারে। এবার ডেভিড ভিসা তাকে ছক্কা মারেন পরপর দুটি। তৃতীয় বলেই অবশ্য আর্ম ডেলিভারিতে ভিসাকে এলবিডব্লিউ করে দেন সাকিব।

১৪ রান দিয়ে ওই ওভার থেকে তার প্রাপ্তি ১ উইকেট। সব মিলিয়ে ৪-০-৩৩-২। শেষ দিকে রোস্টন হেইস ৭ বলে ১৭ রান করে সেন্ট লুসিয়াকে ১৯০ পার করান।

রান তাড়ায় গায়ানাকে দারুণ শুরু এনে দেন গুরবাজ ও চন্দ্রপাল হেমরাজ। প্রথম ওভারেই চারটি বাউন্ডারিতে শুরু করেন তারা। দুজন মিলে ৭ ওভারে তুলে ফেলেন ৮১ রান। হেমরাজ আউট হন ২০ বলে ২৯ করে।

আগের ম্যাচে সাকিবের মতোই প্রথম বলে আউট হওয়া গুরবাজ এই ম্যাচে স্বরূপে ফেরেন। ৭ চার ও ২ ছক্কায় করেন ২৬ বলে ৫২।




নবম ওভারে গুরবাজ ও সাকিবকে পরপর দুই বলে ফেরান অফ স্পিনার মার্ক ডেয়াল। গুরবাজ ধরা পড়েন শর্ট থার্ড ম্যানে। সাকিব নেমে প্রথম ডেলিভারিতেই বলের লাইনে না গিয়ে নিয়ন্ত্রণহীন ড্রাইভের চেষ্টায় বোল্ড হয়ে যান ব্যাট-প্যাডের ফাঁক দিয়ে।

আগের দিন তিনি প্রথম বলে এলবিডব্লিউ হয়েছিলেন ইমাদ ওয়াসিমের বাঁহাতি স্পিনে। টানা দুটি উইকেট হারানোর ধাক্কা গায়ানা সামলে নেয় শেই হোপ ও শিমরন হেটমায়ারের ব্যাটে। ২৮ বলে ৩৬ করেন অধিনায়ক হেটমায়ার। ৫ ছক্কায় ৩০ বলে ৫৯ করে অপরাজিত থাকেন হোপ।

দারুণভাবে ম্যাচ শেষ করে ম্যান অব দা ম্যাচও হোপ। সাকিবদের পরের ম্যাচ রোববার বাংলাদেশ সময় ভোর ৫টায়।

Related articles

Comments

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest articles