বিরোধের জেরে কেটে ফেলা হলো দুই শতাধিক কলা গাছ

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ভাই-বোনের জমি সংক্রান্ত বিরোধে কেটে ফেলা হলো বর্গা নেওয়া ময়ছের আলীর সবরি কলার দুই শতাধিক গাছ। এতে ময়ছেরের প্রায় দুই লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। গত ২৭ জুন সন্ধা সাতটার দিকে

মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই শিল্পাঞ্চল এলাকার রাজাবাড়ি (কুমারজানি) গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, রাজাবাড়ি গ্রামের জাহির সিকদারের ছেলে ছিবার উদ্দিনের কাছ থেকে একই গ্রামের ময়ছের আলী ২০১৭ সালে রাজাবাড়ি মৌজার ৮৭ নম্বর খতিয়ানের ১৪৩৪ নম্বর দাগের ৯৩ শতাংশ জমি ২ লাখ টাকায় ৫ বছরের জন্য ভাড়া নেন একই এলাকার হাকিম উদ্দিনের ছেলে ময়ছের আলী।তিনি ওই জমির ওপর প্রায় এক হাজার সবরি কলার চারা রোপন করেন। গত ২৭

জুন সোমবার রাজাবাড়ি গ্রামের আবেদ আলীর ছেলে আয়নাল হক তার ছেলে মামুন মিয়া লোকজন নিয়ে প্রায় ১৫ শতাংশ জমির সবরি কলাসহ দুই শতাধিক গাছ কেটে ফেলে। প্রাপ্ত কলার ছড়ি আয়নাল হক নিয়ে যান। এছাড়া কিছু গাছ খাল ও ছোট ছড়িগুলো খালে ভাসিয়ে দেন।এতে কলা বাগানের মালিক ময়ছেরের প্রায় দুই লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে আয়নাল হক ও তার ছেলে মামুন মিয়াকে অভিযুক্ত করে জমির মালিক ছিবার উদ্দিন থানায়

লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।রাজাবাড়ি গ্রামের আফসার উদ্দিনের ছেলে আলমগীর হোসেন জানান, আয়নাল হক দুষ্ট প্রকৃতির লোক। তিনি আমাদেরও ৬ শতাংশ জমি ভূয়া কাগজপত্র দিয়ে তার নিজের নামে নামজারি করেছেন।রাজাবাড়ি গ্রামের মাতাব্বর তাজ উদ্দিন আহমেদ ও আজমত আলী বলেন, কয়েক যুগ ধরে ছিবার উদ্দিন ওই জমি ভোগ দখল করে আসছেন। তার কাছ থেকে ওই জমি ভাড়া নিয়ে ময়ছের কলার আবাদ করেছেন। গত সোমবার সন্ধায় আয়নাল হক ও তার ছেলে কেটে ফেলেছে।কলা বাগানের মালিক ময়ছের আলী জানান, তিনি ৫ বছরের জন্য দুই লাখ টাকা দিয়ে ৯৩ শতাংশ জমি ভাড়া নিয়ে ২০১৭ সাল থেকে কলার আবাদ করে আসছেন। এর আগেও আয়নাল হক তার লোকজন



নিয়ে সীমানার বেড়া ভেঙে ফেলেছে। প্রতিবাদ করায় খুন করে মাটিতে পুতে রাখবে বলে হুমকি দিয়েছে। গত সোমবার সন্ধায় বাগানের দুই শতাধিক কলাগাছ কেটে ফেলেছেন। এতে তার প্রায় দুই রাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।অভিযুক্ত আয়নাল হক জানান, আমার স্ত্রীর জহুরা বেগম ছিবার উদ্দিনের ছোট বোন। ছিবার উদ্দিন ও তার বড় ভাই মোকছেদ আলী শ্বশুরের সম্পত্তি বিক্রি করে ফেলছেন। স্ত্রীর অংশ দিতে বললে বিভিন্ন অযুহাত দেখায়।

গত ২০১৪ সালে ওই জমি আমার স্ত্রী আমাকে লিখে দিয়েছে। দলিল মূলে মালিক হয়ে ওই জমি দখলে নেয়ার চেষ্টা করেছি।ছিবার উদ্দিনের ছোট বোন জহুরা বেগম জানান, তিনি বাবার সম্পত্তির অংশ পাবেন। বড় ভাই অংশ না দেয়ায় ওই জমি স্বামীর নামে লিখে দিয়েছি। আমি নিজেই লোকজন নিয়ে বর্গা চাষির কলাগাছ কেটেছি। আমার ছেলে ও স্বামী কলাগাছ কাটেনি।ছিবার উদ্দিন বলেন, বাবা ও ফুফুরা ওই জমি আমাকে ও বড় ভাইকে লিখে দিয়েছেন। এর আগে ওই

জমিতে রোপন করা ৭০টি ইউক্যালেপ্টাস গাছ কেটে ফেলে আয়নাল হক। ভগ্নিপতি আয়নাল হক ইতোমধ্যে আদালতে আমাদের নামে জমি সংক্রান্ত তিনটি মামলা করেছেন। ছোট বোন জহুরা বেগম বাবার নামে থাকা সম্পত্তি থেকে যেটুকু জমি পাবে আমরা তাকে তার পুরোটাই বুঝিয়ে দিবো।মির্জাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আবু সাইদ বলেন, কলা গাছ কাটার সত্যতা পাওয়া গেছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ক্ষতিসাধনের মামলা হবে বলে তিনি জানান।

Related articles

Comments

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest articles